Follow us

জন্মমাসেই ৯৩ বছর বয়সে চলে গেলেন কবি ড. আশরাফ সিদ্দিকী

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লোকসাহিত্যিক, বিশিষ্ট কবি, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও শিক্ষাবিদ ড. আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার ১৯ মার্চ ২০২০ ভোর রাতে দীর্ঘ একমাস যাবত অসুস্থ থাকার পর ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নিভৃতে যাপিত জীবনের কালক্ষেপন করলেও প্রচারবিমুখ এই মানুষটি ছিলেন বর্ণিল কর্মময় অধ্যায়ের অধিকারী। ড. আশরাফ সিদ্দিকী ছিলেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চেয়ারম্যান, প্রেস ইনন্সটিটিউটের প্রেসিডেন্ট, নজরুল একাডেমির আজীবন সভাপতি এবং নজরুল ইনন্সটিটিউটের সভাপতির দায়িত্বপালন করেন। ত্রিশালে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক দায়িত্বে থাকাকালীন তিনি বইমেলার গুরুত্ব কিছুটা হলেও বুঝতে পারেন। তার উদ্যোগে বাংলা একাডেমিকে মেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়। শুরু হয় বইমেলার গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়ের।

বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন যেসব ব্যক্তিত্ব, আশরাফ সিদ্দিকী তাদের একজন। ৪০ এর দশকের শুরুতে প্রতিশ্রুতিময় কবি হিসেবে তার  আত্নপ্রকাশ। তার সাহিত্যিক জীবনে তিনি রচনা করেছেন পাঁচশ এর অধিক কবিতা। বাংলার লোক ঐতিহ্য নিয়ে করেছেন গভীর গবেষনা। একাধারে তিনি প্রবন্ধকার, লোকসাহিত্যিক, ছোটগল্পলেখক এবং শিশু সাহ্যিত্যিক। তিনি রচনা করেছেন ৭৫টি গ্রন্থ এবং অসংখ্য প্রবন্ধ। ১৯৪৮ সালে দূর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে ‘তালেব মাষ্টার’ কবিতা রচনা করে তিনি অল্প সময়ের মধ্যে গণ মানুষের কবি হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ‘গলির ধারের ছেলেটি’ ছোট গল্প লেখক হিসেবে তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করে। এই ছোট গল্প অবলম্বনে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘ডুমুরের ফুল’ চলচ্চিত্রটি জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।

বাংলার মৌখিক লোক সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে লিপি বদ্ধ করার জন্য ড. আশরাফ সিদ্দিকী বিশেষভাবে সমাদৃত। তার লেখা বইগুলো- ‘লোকসাহিত্য’, ‘বেঙ্গলি ফোকলোর’, ‘আওয়ার ফোকলোর আওয়ার হেরিটেজ’, ‘ফোকলোরিক বাংলাদেশ’ এবং ‘কিংবদন্তীর বাংলা’ দক্ষিন এশিয়ার লোক সাহিত্যে গবেষনায় মৌলিক বই হিসেব বিবেচিত হয়। ‘ভোম্বল দাশ: দ্যা আঙ্কল অব লায়ন’ এবং ‘টুনটুনি এন্ড আদার ষ্টোরিজ’ ইত্যাদি গ্রন্থের মধ্যে দিয়ে তিনি বাংলার লোকজ গল্পকে বিশ্ব সাহিত্যের ভান্ডরে পৌছে দেন। ১৯৫৮ সালে প্রখ্যাত ম্যাকমিলান পাবলিশিং থেকে প্রকাশিত তার ‘ভোম্বল দাশ’ বইটি ছিল সে বছরের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধিক বিক্রিত শিশুদের বইয়ের তালিকায়। পরবর্তীতে এ বইটি ১১টি ভাষায় অনুবাদিত হয়। তার ৭০দশকে লেখা ‘রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন’ ও ‘প্যারিস সুন্দরী’ আজও তরুন পাঠকদের কাছে জনপ্রিয়। ড. সিদ্দিকী বহু পুরষ্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন। তার মধ্যে ১৯৮৮ সালে সাহিত্যে একুশে পদক, ১৯৬৪ সালে শিশু সাহিত্যে বাংলা একাডেমী পুরষ্কার, ১৯৬৬ সালে সাহিত্যে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরষ্কার, ইউনেস্কো পুরষ্কার, লোক সাহিত্য গ্রন্থের জন্য দাউদ পুরষ্কার অন্যতম।

 

 

১৯২৭ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলে নাগবাড়ী গ্রামে কবির জন্ম। তিনি পড়াশুনা করেন শান্তিনিকেতন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে তিনি আমেরিকার ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয় হতে দ্বিতীয় এমএ এবং পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি রাজশাহী কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, ময়মনসিংহের এএম কলেজ, ঢাকা কলেজ, জগন্নাথ কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। পরবর্তীতে তিনি কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক, ডিস্ট্রিকট গ্যাজেটিয়ারের প্রধান সম্পাদক ও বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চেয়ারম্যান, প্রেস ইনন্সটিটিউটের প্রেসিডেন্ট, নজরুল একাডেমীর আজীবন সভাপতি এবং নজরুল ইনন্সটিটিউটের সভাপতির দায়িত্বপালন করেন। ত্রিশালে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেন।
কবির মরদেহ বসুন্ধরার এপার্টমেন্ট ৯এ, ৩৭৫/৩৭৬, সড়ক: ১০, ব্লক: সি তে রাখা হয়েছে।  আত্মীয় ও গুনগ্রাহীদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ১. ৩৫ টা পর্যন্ত তাঁকে তার ধানমন্ডির বাসভবনের রাখা হবে (আশরাফ সিদ্দিকী রুপকথা, বাড়ী:৬৪, সড়ক: ৭এ, ধানমন্ডী আবাসিক এলাকা)। তার নামাযে জানাযা ধানমন্ডি শাহী ইদগাহ মসজিদে বাদ যোহর অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, সিদ্দিকী ১৯৫০ সালে টাঙ্গাইলের কুমুদীনি কলেজে অধ্যাপনার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৬ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ছয় বছর বাংলা একাডেমীর দায়িত্ব পালন করার পর ১৯৮৩ সালে জগন্নাথ কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। জগন্নাথ কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি কর্মজীবন থেকে অবসর নেন।
তিনি ১৯৫১ সালের ২৩ ডিসেম্বর তিনি সাঈদা সিদ্দিকীকে বিবাহ করেন। তাদের পাঁচ সন্তান সবাই উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং নিজ নিজ পেশায় সুপ্রতিষ্ঠিত। আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য একুশে পদকসহ ৩৬টি পুুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

বিডি প্রেসরিলিস /১৯ মার্চ ২০২০ /এমএম


LATEST POSTS
প্রিমিয়ার ব্যাংক ও নগদের মধ্যে রেমিট্যান্স বিতরণ বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর

Posted on এপ্রিল ১৭th, ২০২৪

প্রিমিয়ার ব্যাংক ও নগদের মধ্যে রেমিট্যান্স বিতরণ বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর

Posted on এপ্রিল ১৭th, ২০২৪

বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিশ, চুক্তি বাতিল

Posted on এপ্রিল ১৭th, ২০২৪

অনারের মিডরেঞ্জ ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন এক্স৯বি

Posted on এপ্রিল ১৭th, ২০২৪

ঢাকায় অনারের আরোও নতুন দুটি আউটলেট

Posted on এপ্রিল ৬th, ২০২৪

স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রূপালী ব্যাংকের শ্রদ্ধা

Posted on মার্চ ২৬th, ২০২৪

মিনিস্টার গ্রুপ-ফরাজী হাসপাতালের মাঝে সমঝোতা

Posted on মার্চ ২৬th, ২০২৪

লাইজলের বিশেষ ক্যাম্পেইন

Posted on মার্চ ২৬th, ২০২৪

আইডিপি এডুকেশনের সঙ্গে গ্রামীণফোনের চুক্তি

Posted on মার্চ ২৫th, ২০২৪

চলতি মাসে ভারতে ৫০ লাখ টাকার ফ্যান রপ্তানি করেছে ওয়ালটন

Posted on মার্চ ২৪th, ২০২৪