নিজস্ব প্রতিবেদক :: তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) পরিচালনা পর্ষদের ২০১৮-২০ মেয়াদের নির্বাচনের দিনক্ষণ প্রায় চলেই এসেছে। মাত্র কটা দিন বাকি আছে এ নির্বাচনের। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থীদের প্রচারণাও বেড়ে চলছে। আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠেয় বেসিসের এই নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে ‘টিম হরাইজন’ প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্ধী বেশ কয়েকজন প্রার্থীর সঙ্গে। তাঁরা হলেন বেসিসের বর্তমান নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউওয়াই সিস্টেমস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা এ রহমান, সাবেক মহাসচিব ও বিজনেস অটোমেশন লিমিটেডের পরিচালক শোয়েব আহমেদ মাসুদ, পরিচালক ও সফট পার্কের প্রধান নির্বাহী দেলোয়ার হোসেন ফারুক এবং ক্রসওয়েজ আইটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাহিম তানভীর আহমেদ। তাঁরা জানিয়েছেন তাঁদের পরিকল্পনা।
ফারহানা এ রহমান
এই নারীর উদ্যোক্তার মতে, কেউ ব্যবসায়ী হিসেবে সফল হলেই সংগঠন চালানোয়ও যে সফল হবে তা নয়। সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে কিংবা এতে যুক্ত থেকে নিয়মিত কাজ করতে চাইলে আগ্রহ থাকাটা খুব বেশি প্রয়োজন। আর এই আগ্রহ নাকি টিম হরাইজন প্যানেলের সদস্যদের আছে।
ফারহানা এ রহমান জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচিত হলে তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেবেনে সবচেয়ে বেশি। এক, তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য রপ্তানির জন্য নতুন বাজার খোঁজা। দ্বিতীয়ত, আইটি খাতে আমাদের বর্তমান অবস্থা আসলে কী? সেটা খুঁজে বের করতে একটি জরিপ চালানো হবে। যাতে পুরো ইন্ডাস্ট্রির তথ্য উঠে আসে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, দিনদিন প্রযুক্তি ট্রেন্ড পরিবর্তন হচ্ছে। আইওটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিংয়ের যুগ শুরু হচ্ছে। তাই যারা পুরাতন ট্রেন্ডের উপর নির্ভরশীল হয়ে কাজ করছেন, তাঁরা যেন এসব প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন, এজন্য কৌশল খুঁজে বের করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া নিজে নারী উদ্যোক্তা হওয়ায় নারীদের নিয়েও কাজ করবেন তিনি।
শোয়েব আহমেদ মাসুদ
বেসিসকে এগিয়ে নিতে হলে ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব দরকার, এমনটিই মনে করেন শোয়েব আহমেদ মাসুদ। তিনি জানান, টিম হরাইজনের যে ইশতেহার তাতে উনাদের সকলের মতের প্রতিফলন ঘটেছে। তবে তাঁরও ব্যক্তিগত অঙ্গীকার রয়েছে।
এই আইটি ব্যবসায়ী বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি কয়েকটি বিষয় দ্রুত বাস্তবায়ন করা গেলে বেসিস সদস্যদের জন্য আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। প্রথমত, বেসিস সদস্যদের জন্য সম্প্রতি উদ্যোগ নেওয়া ‘ওয়ান স্টপ সেবা’ বাস্তবায়ন ও সম্প্রসারণ খুবই জরুরি। যেখানে আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। এতে নাকি বেসিসের বিভিন্ন সেবার জন্য দ্রুত, মানসম্মত ও অনলাইন সেবা নিশ্চিত হবে।
উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিদ্যমান প্রশিক্ষণ ছাড়াও ই-জিপি ও মানসম্মত প্রকল্প প্রস্তাব লেখার প্রশিক্ষণ, ট্যাক্স-ভ্যাট ও আইনি বিষয়ে রেফারেন্স ডকুমেন্ট সহায়তা, অভিজ্ঞ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও পরামর্শ সেশনসহ অন্যান্য কর্মসূচি নিয়মিতভাবে চালানোর ব্যাপারে তিনি সচেষ্ট থাকবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া দেশীয় উদ্যোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে পিপিআর সংশোধনের চলমান উদ্যোগটি সম্পন্ন করা এবং নন-ট্যারিফ সাপোর্ট দেয়ার বিষয়টি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
দেলোয়ার হোসেন ফারুক
বেসিসের এই নির্বাচনের জন্য দেলোয়ার হোসেন ফারুক জানিয়েছেন বেশ কিছু প্রতিশ্রুতির কথা। এসব প্রতিশ্রুতি হলো-
১. বেসিস সদস্যদের জন্য ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সহজ শর্তে মূলধন যোগান।
২. স্থানীয় বাজারকে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করা।
৩. সদস্যদের আইনী সমস্যা সমাধানে ‘আইনি পরামর্শক সহায়ক সেল’ স্থাপন করা।
৪. সদস্য কল্যাণ তহবিল গঠন।
৫. বেসিস সদস্য ক্লাব প্রতিষ্ঠাকরণ।
৬. সদস্যদের জন্য সদস্যবান্ধব সচিবালয় প্রতিষ্ঠাকরন।
৭. এসোসিয়েট ও জেনারেল ক্যাটাগরীর বিদ্যমান বৈষ্যম দূরীকরণ।
ফাহিম তানভীর আহমেদ
ব্যবসায়ের পাশাপাশি বেসিসের ডিজিটাল এডুকেশন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও আছেন তিনি। ২০১৩ সালে ব্যবসা শুরুর আগে প্রায় ১৭ বছরের ক্যারিয়ার জীবনে ফাহিম তানভীর আহমেদ কাজ করেছেন কয়েকটি স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে। ফাহিম তানভীর আহমেদ জানান, আইসিটি শিল্পের উন্নয়নে নিজ দায়বদ্ধতা থেকে নির্বাচন করছেন। দায়বদ্ধতা বলতে বলেন, শুধু নিজের জন্য করলে হবে না। দেশের জন্যও কিছু করতে হবে।
তিনি বলেছেন, নির্বাচিত হলে ২-৩ বছরের মধ্যে পুরো ইন্ড্রাস্টির জন্য দীর্ঘ মেয়াদের একটি নীতিমালা করতে চাই। আমরা শুধু বলছি, পণ্য রপ্তানি করব। যেই অংকের পণ্য রপ্তানী করব বলছি ঠিক সেই পরিমাণ বা এর চেয়েও বেশি টাকার আইটি পণ্য এবং সেবা আমরা আমদানী করছি। তাও কমিয়ে আনা দরকার। এ জন্য স্থানীয় বাজারকে শক্তিশালী করতে হবে। আর তার জন্য সঠিক একটা নীতিমালা প্রয়োজন। আর তা করার চেষ্টা করব।
বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য কিভাবে সহায়ক হবে, তাও ঠিক করতে চাই। দেখা যাচ্ছে, অনেক বিদেশী প্রতিষ্ঠান এখানে কাজ করছে। কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নের জন্য কিছু করছে না। প্রতিটি বিদেশী সফটওয়্যার কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে আয় করা প্রতি ১০০ ডলারের ৫ ডলার আমাদের স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য বিনিয়োগ করলেই আগামী ৩-৫ বছরের মধ্যে আমাদের বিদেশী পরামর্শকদের আর দরকার হবেনা। আমরা যেমন বিপুল বৈদেশিক মূদ্রা বাঁচাবো তেমনি ভবিষ্যতের জন্য রপ্তানি আয়ের নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবো। এদেশ হবে আইটি সার্ভিসের নতুন গন্তব্য। তবে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দুই বছর যথেষ্ট নয় এমন অভিমত ফাহিম তানভীর আহমেদের। তবে বললেন, শুরুতো করতে হবে। ২-৩ বছরের মধ্যে সম্ভাবনাময় আইটি সার্ভিসেস ইন্ডাস্ট্রির ভিত্তি তৈরি করা সম্ভব।
বেসিস নির্বাচন নিয়ে তাঁদের প্রত্যাশা
প্রত্যেকে জোর দিয়ে বলেছেন, সামনের সময়টা দেশের আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে অনেক কিছু অর্জনের পরিকল্পনা আছে। এই লক্ষমাত্রা বাস্তবে রুপ দিতে হলে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। এজন্য দক্ষ পরক্ষিত নেতৃত্ব দরকার। এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কোনো সুযোগ নাই। তাই বেসিসের সদস্যরা এমন নয়জনকে এবার নির্বাচন করবেন, যারা এর জন্য উপযুক্ত। যারা কিনা পুরো এই শিল্পকে এগিয়ে নেবে দীর্ঘ মেয়াদের সঠিক একটি নীতিমালার মাধ্যমে।
(বিডি প্রেস রিলিস/২৫ মার্চ/এসএম)
Posted on ডিসেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on ডিসেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ২৬th, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ২৬th, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ১৭th, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ১৭th, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ১৭th, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ৩rd, ২০২৪