আশরাফুল ইসলাম রানা :: টেক্সটাইলে পাস করা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার হলেও ক্যান জানি হয়ে গেলাম সাংবাদিক। আর হবি যখন খাওয়া দাওয়া তাই সবকিছুতেই টেনে আনি খাওয়া। কাল থেকে মানুষের ওয়ালে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটা হলুদ শার্ট আর সাথে একটা নাম #ক্যাটস আই। আমি ভাবলাম সবাই হুলদ শার্টে হিমু সাজবে এবার ঈদে। কিন্তু ব্যাপারটা ভিন্ন। এই হলুদ শার্টের দাম লোকাল বাজারে নাকি ৪৫০ টাকা। কিন্তু ক্যাটস আই বিক্রি করে ২১৫০ টাকা! বিশাল অপরাধ, সবাই শেয়ার দিচ্ছেন, আলোচনাও মুখরোচক! কিন্তু শেয়ার দেবার আগে আপনার মাথার ঘিলু নামক বস্তু টাকে কিছূ প্রশ্ন করি-
১. আমার পোস্টের বার্গারটা একটি ফুট পাথের ফুড কার্ডের দাম ৭০ টাকা আর বার্গার কিং এর টার দাম ৩৪৯ টাকা+১৫% ভ্যাট। দুই টাই তো রুটির বান দাম এতো ক্যান? ব্র্যান্ড, কোয়ালিটি, পরিবেশ, অফিস-শোরুম খরচ সবই কিন্তু পণ্যের দামে যুক্ত। যে যেটাতে অভ্যস্ত তাকে সেটাই ব্যবহার করা উচিত, কোন কমপেয়ার না করে।
২. ব্র্যান্ডের পণ্যের দাম বেশী এটা যারা বলেন, তাদের কে বলি ব্র্যান্ড বা ডিজাইনার লেবেল কিন্তু সবার জন্য না। ব্র্যান্ডের পণ্য তৈরির পিছনে পণ্যের মান, জবাবদিহিতা, পরিবেশ এবং বিক্রোত্তর সেবা এই ব্যাপারগুলো থাকে।
৩. আমাদের দেশে বিদেশী ফ্যাশন ব্যান্ড এখনো তাদের স্টোর অফিশিয়ালি খোলেন নাই কারন “তারা মনে করেন আমরা নট সফিস্টিকেটেট এনাফ”। আমাদের বাজারে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো তাই এখনো আসে না।
৪. আপনি জানেন কী? যারা এদেশের জনবল ব্যবহার করে, দেশে বিনিয়োগ করে, কর্মসংস্থান তৈরি করছে সেই সব ফ্যাশন ব্র্যান্ডএর ভ্যাট ট্যাক্স সংক্রাত জবাবদিহিতা একটি নন ব্র্যান্ডের থেকে বেশী।
৫. গার্মেন্টসগুলো বন্ড এর আওতায় বিনা ট্যাক্সে ফেব্রিক আমদানী করতে পারে যেটার সুবিধা আমার দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডের জন্য নাই। ফ্যাশন ব্র্যান্ড নিজে পণ্য তৈরি করলে ফ্যাক্টরীর জন্যেও বাড়তি ১৫% ভ্যাট পরিশোধ এর একটা ব্যাপার রয়েছে।
৬. একটা ফ্যাশন ব্র্যান্ড পণ্যের দাম নির্ধারণ করেন তার শোরুমের খরচ, শোরুম বাবদ অ্যাডভান্স বিনিয়োগ, ফ্যাক্টরি খরচ, অফিস খরচ, দক্ষ জনবল বাবদ বেতনাদি, ব্যাংক লোন থাকলে তার সুদসহ প্রিমিয়াম, ফ্যাশন ডিজাইন এর ভ্যালু, বিক্রয়ত্তোর সেবা, মার্কেটিং , সরকারী ভ্যাট ট্যাক্স বা অন্যান্য ফি এবং বিপনন খরচ এর উপর।
৬. নন ব্র্যান্ড দোকানগুলো পাইকারী পণ্য কিনে একটা দোকান দিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে।
৭. জনপ্রিয় ব্যান্ডের ফেক পণ্য বাজারে ঈদ, শীতকালীন ফেস্টিভ বা বছরের অন্যান্য সময় ছাড়া হয়। এটিতে জড়িত থাকে বঙ্গবাজার, কালী গঞ্জ, ইসলামপুর, নরসিংদী এর কিছু ব্যবসায়ী। একই ধরনের কাপড়ের মতো দেখতে প্রিন্ট মানেই কিন্তু একই মানের কাপড় নয়।
৮. স্টিচ কোয়ালিটি, কাপড়ের ওয়াশ, ফেব্রিক এর আরামদায়ক ব্যাপারটার পাশাপাশি ডিজাইন এবং প্যাটার্ন টাও দেখতে হবে।
১০. ফ্যাশন ব্র্যান্ড সমাজের সকলের জন্য না বলেই আমি বিশ্বাস করি। ব্র্যান্ড ভ্যালু যে বুঝে সে পন্যের কোয়ালিটি বুঝেই শপিং করবেন। যার পণ্যের কস্টিং বা খরচের খাত নিয়ে ধারনা নাই তার সে বিষয়ে অভিজ্ঞ আচরণ দেখানোটা বোকামী ।
আপনি আপনার সামর্থ্যনুযায়ী এবং রুচির সাথে মানানসই পণ্য কিনুন। আপনার স্বাধীনতা আপনি কী পরবেন। কিন্তু না বুঝে তুলনা করতে গেলে অবশ্যই আমি বলবো
এ পর্যন্ত ক্যাটস আই এর পণ্য নিজের টাকা দিয়ে কিনেছিলেন কী? কিনলে সেটা পড়ে কী একবারও মনে হয়েছে আপনি ঠকেছেন?
এদেশে প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮০ সাল থেকে ব্যবসা করে আসছে। মেইড ইন বাংলাদেশ শব্দটা শার্টের গায়ে ট্যাগ করে ব্যবহার টাও তাদের হাত দিয়েই শুরু। প্রতিষ্ঠানটি সততা নিয়ে কাজ করে মানুষ ঠকাতে না।
লেখা ও ছবি আশরাফুল ইসলাম রানার ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে
(বিডি প্রেস রিলিস/১২ জুন ২০১৮/এসএম)
Posted on নভেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on নভেম্বর ৩rd, ২০২৪
Posted on অক্টোবর ৩০th, ২০২৪
Posted on অক্টোবর ৩০th, ২০২৪
Posted on অক্টোবর ৩০th, ২০২৪
Posted on অক্টোবর ৩০th, ২০২৪
Posted on অক্টোবর ২৭th, ২০২৪
Posted on অক্টোবর ২৭th, ২০২৪
Posted on অক্টোবর ১৩th, ২০২৪