Follow us

আইপিএল-বিগ ব্যাশকে টক্কর দিচ্ছে বিপিএল

আইপিএল-বিগ ব্যাশকে টক্কর দিচ্ছে বিপিএল

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সবদিক দিয়েই গেল পাঁচ আসরকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে এবারের বিপিএল। বিশ্ব ক্রিকেটের একাধিক মহাতারকার অন্তর্ভুক্তি সিজন সিক্সের গ্ল্যামার বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়ের সম্মিলনে মাঠে হচ্ছে ব্যাট-বলের তুমুল লড়াই। শুরুতে খেই হারালেও এখন ধারাভাষ্য হচ্ছে চমৎকার। উপস্থাপনাতেও এসেছে বৈচিত্র্য। পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয়েছে সম্প্রচারে। তাতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। সবমিলিয়ে জমজমাট আয়োজন।

তবে সবচেয়ে দৃষ্টি কেড়েছে, এবারের বিপিএলে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার বিষয়টি। যা বিগত আসরগুলোকে তো ছাড়িয়ে গেছেই, রীতিমতো টক্কর দিচ্ছে আইপিএল, বিগব্যাশসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় টি-টোয়েন্টি লিগকে।

ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে জমাট আয়োজনের বড় অনুষঙ্গ সম্প্রচারের মান। অতীতে মাঠের ক্রিকেট বা নামি বিদেশিদের উপস্থিতি মিলিয়ে বিপিএল যথেষ্টই সাধুবাদ পেয়েছে। তবে টিভি দর্শকের কাছ থেকে শুনতে হয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। এবার উল্টো প্রশংসা কুড়াচ্ছে। বিশেষ করে গেল আসরে সম্প্রচারের নিম্নমান নিয়ে সমালোচনা ছিল উতুঙ্গে। ক্যামেরার বাজে ফ্রেমিং, অপর্যাপ্ত শট ও উপস্থাপক নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা হয়েছিল টুর্নামেন্টজুড়ে।

বরাবর এ বিষয়গুলোর নিয়ন্ত্রণ ছিল সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে। তবে এবারের বিপিএলে দায়িত্বটি নিজেদের হাতেই রেখেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তাতেই পাল্টে গেছে সব। ২০১৯ সালের বিপিএলে ব্যবহৃত হচ্ছে অসংখ্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। ফলে সম্প্রচার মান হয়েছে বিশ্বমানের। এতে স্টেডিয়ামের বাইরে বসে থাকা দর্শকের কাছে খেলা উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। শুধু দেশীয় না, বিদেশি দর্শকরাও উপভোগ করছেন দৃষ্টিনন্দন প্রতিযোগিতা। কলা প্রযুক্তির ব্যবহার তাতে এনেছে নতুনত্ব।

এবারের আসরে খেলছেন ক্রিস গেইল, শহীদ আফ্রিদি, এবি ডি ভিলিয়ার্স, স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারাইন, অ্যালেক্স হেলস, লুক রনকি, ইমরান তাহির, কার্লোস ব্র্যাথওয়েট, সন্দ্বীপ লামিচানে, ওয়াহাব রিয়াজ, সোহেল তানভীর, রাইলি রুশো, এভিন লুইস, লাসিথ মালিঙ্গা, জুনায়েদ খানের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাররা। তাদের ও স্থানীয় সুপারস্টার এবং ঘরোয়া ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ ও অনবদ্য পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে জৌলুস।

তবে আলোচনার কেন্দ্রে বিশ্বমানের সম্প্রচারই। সম্প্রচার মান উন্নত করতে বাড়ানো হয়েছে ক্যামেরার সংখ্যা। আগের আসরগুলোয় যেখানে ১৭-১৮টি ক্যামেরা ব্যবহার হয়েছিল। সেখানে এবার হচ্ছে ৩৫টি। এর মধ্যে ১৮টি মনুষ্যচালিত। ফলে গোটা মাঠ দৃশ্যমান হচ্ছে। ইঞ্চি পরিমাণ কিছু বাদ পড়ছে না। শুধু মাঠ না, ভেন্যুর কোথাও কেউ কিছু করছে কি না-নজরদারি করা যাচ্ছে নিখুঁতভাবে। এমনকি খেলোয়াড়েরা খেলাটির চেতনাবিরোধী কিছু করছে কি না-তাও দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।

গ্রাফিকসেও ভিন্নতা এসেছে। প্রথমবারের মতো ব্যবহৃত হচ্ছে ড্রোন ক্যামেরা, যা টিভি স্ক্রিনে খেলা দেখতে চোখকে স্বস্তি দিচ্ছে। ওপর থেকে মাঠের যাবতীয় কর্মকাণ্ড ধারণ করে সবকিছু পরিষ্কার করে দেখাচ্ছে এ ক্যামেরা। ব্যবহৃত হচ্ছে স্পাইডার ক্যাম, যার মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে খেলা দেখা যাচ্ছে। আগে এগুলো আইপিএল, বিগ ব্যাশ ও আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্যবহৃত হতো। দুই দলের ডাগআউটে থাকছে একটি করে রোবোটিক ক্যামেরা, যার মাধ্যমে দর্শকরা দেখতে পারছেন পছন্দের দলের ডাগআউটে প্রিয় খেলোয়াড়দের সমারোহ।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বহুল ব্যবহৃত এলইডি স্ট্যাম্প ব্যবহার করা হচ্ছে ষষ্ঠ বিপিএলে। এতে স্ট্যাম্পে কোনো কিছুর আঘাত লাগলেই জ্বলে উঠছে গ্লোয়িং বেল (জিং বেইলস)। বিপিএল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ম্যাচে ব্যবহৃত হচ্ছে দ্বিমুখী স্ট্যাম্প ক্যামেরা। এতে ক্রিজের সামনে-পেছনে কী ঘটছে তার প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠছে।

চালু আছে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস)। বিপিএলে এবারই প্রথম দেখা যাচ্ছে ডিআরএস। ব্যয়বহুল সিস্টেমটি সাধারণত বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে ব্যবহার করা হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিপক্ষীয় সিরিজেও ডিআরএসের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। ডিআরএসে সাধারণত ব্যবহৃত হয় তিনটি পদ্ধতি। হক-আই, হটস্পট ও স্নিকোমিটার।

হক-আই’র ব্যবহারে এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত সঠিক হচ্ছে। বল পায়ে লাগলে আম্পায়ার আউট দিলে সন্দেহ হলে রিভিউ নিচ্ছেন ব্যাটসম্যানরা। পরে টিভি রিপ্লে স্পষ্ট হয়ে উঠছে বল স্ট্যাম্প ভাঙছে কি না। এককথায়, বল ট্র্যাকিংয়ে সুনিপুণভাবে সহায়তা করছে হক-আই। আর নিখুঁত কট বিহাইন্ডের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করছে হটস্পট। সন্দেহ হলে অনেক সময় ব্যাটারকে আউট দিয়ে দেন আম্পায়ার। তবে বল ব্যাটে লেগেছে কিনা তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে হটস্পটে।

স্নিকোমিটারের জায়গাতেই নতুন প্রযুক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে আল্ট্রা এজ। আল্ট্রা এজ হক-আইয়ের স্নিকো ভার্সন। স্নিকোমিটারের কাজ হচ্ছে শব্দ শনাক্ত করা। উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন মাইক্রোফোনের মাধ্যমে শনাক্ত হয় এ শব্দ। বল প্যাডে লাগল নাকি ব্যাটে, তা নির্ধারণ করা হয় আওয়াজের মাধ্যমে। বরাবর ব্যাটে বল লেগেছে কি না, তা বোঝার জন্য স্নিকোমিটার প্রযুক্তির সাহায্য নেয়া হতো। কিন্তু সেই প্রযুক্তি ত্রুটিপূর্ণ বা অসম্পূর্ণ ছিল। কিছু ক্ষেত্রে বারবার টেলিভিশন রিপ্লে দেখা সত্ত্বেও তৃতীয় আম্পায়ার সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারতেন না। প্রযু্ক্তিগত ভুল থাকায় এ ‘স্নিকোমিটার’-এর পরিবর্তে ‘আলট্রা এজ’ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। যা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে তৃতীয় আম্পায়ারকে সাহায্য করছে। ফিল্ড আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্ত শুধরে দিতে সহায়তা করছে।

সম্প্রচারকরা ব্যবহার করছেন দ্বিমুখী আল্ট্রা-মোশন ক্যামেরা। এতে জনাকীর্ণ স্টেডিয়ামে প্রচণ্ড হৈচৈ ও গোলযোগের মধ্যেও সবকিছু পরিষ্কারভাবে বোধগম্য হয়ে উঠছে অফফিল্ড ও অনফিল্ড আম্পায়ারদের কাছে। তাৎক্ষণিক সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন তারা। ফলে খেলার ফলাফলে কোনো তারতম্য ঘটছে না।

স্পাইডারক্যাম ও ড্রোন ক্যামেরার সংযোজন বিপিএলে আনন্দের মাত্রাটা বাড়িয়ে দিয়েছে শতগুণ। বোর্ডের উদ্যোগে এ বছরই প্রথম অত্যাধুনিক সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি মাঠ থেকে খেলা সরাসরি সম্প্রচারে দক্ষ জনবল ও আগের চেয়েও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।

চলতি বছরের বিপিএল সম্প্রচার ও কাভারে বিসিবি ভাড়া করেছে বিখ্যাত সম্প্রচারক ও পরিচালক টিম ফিনলে এবং তার প্রতিষ্ঠানকে। মাল্টি মিলিয়ন ডলারের টুর্নামেন্ট আইপিএলের ১০ মৌসুম এবং বিশ্বের বড় বড় ক্রীড়া ইভেন্ট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন (সম্প্রচার-কাভার) করার) করার অভিজ্ঞতা আছে মিস্টার ফিনলের।ফলে সম্প্রচারের মান নিয়ে ভক্ত-সমর্থকদের মনে থাকা ক্ষোভ দূর হয়েছে।

মূলত বাংলাদেশের জনপ্রিয় ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগটিকে বিশ্ব দরবারে আরো গ্রহণযোগ্য করে তুলতেই এতসব উদ্যোগ বিসিবির। এতদিন না পেলেও এবার টিভি স্ক্রিনে বিপিএল দেখে আইপিএল-বিগ ব্যাশের মতো স্বাদ পাচ্ছেন দেশ ও দেশের বাইরের ক্রিকেটামোদিরা। স্বাভাবিকভাবেই এ টুর্নামেন্টে বৈশ্বিক দর্শক বেড়েছে। কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী যুক্ত আছেন। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টি আছে এতে। বাইরের ক্রিকেটার ও বোদ্ধাদেরও নজর রয়েছে।

ফলে ক্রিকেটের ব্র্যান্ডিং বেড়েছে, বানিজ্যিক প্রসার ঘটেছে। সঙ্গত কারণে ইতিমধ্যে দুনিয়ার অন্যতম শীর্ষ টি-টোয়েন্টি লিগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বিপিএল। প্রতিদ্বন্দ্বিতা, সম্প্রচার যখন বিশ্ব পর্যায়ের, তখন অপর দুই বিদেশি লিগের মতোই ক্রিকেট বিশ্বে স্বীকৃতি পাক বিপিএল-এমনই প্রত্যাশা বাংলাদেশ বোর্ড ও ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের।

বিডি প্রেস রিলিস/৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/এসএম


LATEST POSTS
বন্যাদুর্গত ইলেকট্রনিক্স পণ্যের গ্রাহকদের ফ্রি সার্ভিস দিবে ওয়ালটন

Posted on সেপ্টেম্বর ১০th, ২০২৪

নতুন মডেলের মেকানিক্যাল, আরজিবি ও রিচার্জেবল কিবোর্ড-মাউস এনেছে ওয়ালটন

Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৩৯৭তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪

কমিউনিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৫৬তম সভা অনুষ্ঠিত

Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪

ওয়ালটনের আকর্ষণীয় ডিভিডেন্ড ঘোষণা : সুদৃঢ় নেতৃত্বে মুনাফা বেড়েছে ৫৭৩.৮৫ কোটি টাকা

Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪

চীন সফরে উইমেন ইন টেকের ৩ বিজয়ী

Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪

ইউসিবির নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত

Posted on সেপ্টেম্বর ৫th, ২০২৪

মাসজুড়ে চলবে ভিভোর ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা

Posted on সেপ্টেম্বর ৪th, ২০২৪

বিকাশে পরিশোধ করতে পারছেন আইডিএলসি গ্রাহকরা লোনের কিস্তি, ফি ও চার্জ

Posted on সেপ্টেম্বর ৩rd, ২০২৪

আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসায় ইউসিবির অর্থ সহায়তা

Posted on সেপ্টেম্বর ৩rd, ২০২৪